বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য হতাশাজনক খবর দিয়েছে সরকারি বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ। বিভাগীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের বিজ্ঞান মেলার জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে, তারা যদি অংশগ্রহণ করতে চান, তবে নিজ খরচে প্রজেক্ট তৈরি করতে হবে।
বিভাগের প্রধান তাসলিমা ফেরদৌস ও সহকারী অধ্যাপক আরেফিন স্যারের যৌথ মতামতে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়। তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী, “বিভাগীয় বাজেটে বিজ্ঞান মেলার জন্য কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।”
এদিকে, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে ৭ ও ৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণের জন্য দুটি বিশেষ প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।
প্রকল্প দুটি হলো:
১) Anti-Missile Destroyer
২) Cross Watch
এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে আনুমানিক ১১ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই অর্থ সহায়তার আবেদন বিভাগীয় প্রধান বরাবর করলেও কোনো বরাদ্দ না পাওয়ায় তাঁরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
এই সিদ্ধান্তে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন,
“ভর্তি হয়েই প্রথমবার বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেওয়ার স্বপ্ন ছিল। এখন শুনছি নিজের টাকায় করতে হবে—ভীষণ নিরুৎসাহিত লাগছে।”
দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন,
“সবাই তো আর সমান আর্থিকভাবে সক্ষম না। অর্থ না থাকলে কি বিজ্ঞানচর্চা বন্ধ থাকবে?”
তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান,
“বিজ্ঞান মেলা মানে তো গবেষণামূলক চিন্তা ও উদ্ভাবন। বিভাগ যদি সেই জায়গায় পাশে না থাকে, তাহলে আমরা কিভাবে আগ্রহ নিয়ে কাজ করব?”
চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন,
“নিজ খরচে সব করতে গেলে অনেকেই অংশ নিতে পারবে না। এতে সৃজনশীল ছাত্ররা পিছিয়ে পড়বে।”
মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন,
“আমরা যখন জুনিয়র ছিলাম, তখনও তেমন সহযোগিতা পাইনি। কিন্তু এবার ভাবছিলাম অভিজ্ঞতা দিয়ে গাইড করব—কিন্তু এখন কারো আগ্রহই থাকছে না।”
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেখানে গবেষণাভিত্তিক কার্যক্রম বাড়ানোর কথা, সেখানে বিভাগীয় এই ধরনের অবস্থান অত্যন্ত হতাশাজনক।
বিশ্লেষকদের মতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিজ্ঞানচর্চা এবং প্রজেক্টভিত্তিক শেখার পরিবেশ তৈরি না হলে ভবিষ্যতে গবেষণার মান ও উদ্ভাবন উভয়ই ব্যাহত হবে।
ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসন বা বিভাগের পক্ষ থেকে যদি বিষয়টি পুনর্বিবেচনা না করা হয়, তবে ভবিষ্যতে বিজ্ঞানচর্চায় শিক্ষার্থীদের অনাগ্রহ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।