{getBlock} $results={3} $label={রাজনীতি} $type={headermagazine}

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপে সরগরম চট্টগ্রাম উত্তর

চট্টগ্রাম উত্তরের রাজনীতি এখন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ঘিরে সরগরম।
প্রকাশঃ
অ+ অ-

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অনিশ্চয়তা অনেকটাই কেটে গেছে। সম্প্রতি লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গোপন বৈঠক রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন গতি এনেছে। এই বৈঠকের পর বিএনপি ও তাদের মিত্রদের মধ্যে নির্বাচনী ধোঁয়াশা অনেকটাই কেটে গেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা, যার প্রভাব পড়েছে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যেও।

বিশেষ করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা কয়েক গুণ বেড়েছে। জেলাজুড়ে চলছে সভা-মিছিল, কৌশল বিনিময় এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসন বাদে বাকি পাঁচটি আসনেই একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এতে করে দলীয় কোন্দল বাড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে, যা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সুবিধা দিতে পারে।

সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে থাকা জামায়াত এরই মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার কয়েকটি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এসব আসনে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আসনভিত্তিক চিত্র:

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই)

মিরসরাই উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন। এছাড়াও, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী উত্তর জেলা বিএনপির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন (চেয়ারম্যান), উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, ক্লিপটন গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর এমডি কামাল উদ্দিন চৌধুরীর ছোট ভাই বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবং বড়তাকিয়া গ্রুপের কর্ণধার মনিরুল ইসলাম ইউসুফ আলোচনায় আছেন।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি)

ফটিকছড়ি আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী পিজিআর-এর সাবেক প্রধান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মো. আজিম উল্লাহ বাহার এবারও সক্রিয়। তার পাশাপাশি উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ ফয়জী এবং উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছালাউদ্দিন ও সরওয়ার আলমগীর মনোনয়ন চাইছেন।

এছাড়া, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) মহাসচিব এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীও ফটিকছড়ি থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বলে জানা গেছে। তবে এই আসনে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন বিএনপির প্রয়াত নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এই আসনে জয়ী হয়েছিলেন। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে, আসন্ন নির্বাচনে তার পরিবারের কাউকে বিএনপি মনোনয়ন দিতে পারে।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ)

চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপির মনোনীত দুবারের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা এবং বিএনপির জাতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিলন্টন আলোচনায় আছেন। এছাড়াও উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন ও সাবেক ছাত্রনেতা রাফি উদ্দিন ফয়সাল মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন।

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড)

এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রার্থী হিসেবে দলের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী এককভাবে বিবেচিত হচ্ছেন। তার বিকল্প হিসেবে এখনো অন্য কোনো প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে না। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যেও তার প্রার্থিতা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। বরং তাকে কেন্দ্র করেই মাঠপর্যায়ে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দলের মধ্যে এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান সীতাকুণ্ডে বিএনপির নির্বাচনী পরিকল্পনাকে আরও সুসংহত করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী)

এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের অবস্থান বেশ ভালো বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক এবং সাবেক হুইপ ও সংসদ সদস্য সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের কন্যা বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা আলোচনায় রয়েছেন।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান)

এই আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের নাম শোনা যাচ্ছে। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন সিকদার।

চট্টগ্রাম সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার ছয়টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩১ জন। নির্বাচনের প্রাক্কালে মাঠের সমীকরণ কোন দিকে মোড় নেবে, তা নির্ভর করছে বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণ এবং জোটগত সমন্বয়ের ওপর।

একটি মন্তব্য করুন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন