হারানো কোরবানির মহিষটি ভারত থেকে ফেরত আনলো বিজিবি
পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বাগানবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. নাজিম উদ্দিনের কোরবানির মহিষ অসাবধানতাবশত ছুটে গিয়ে...পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বাগানবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. নাজিম উদ্দিনের কোরবানির মহিষ অসাবধানতাবশত ছুটে গিয়ে ফেনী নদী পেরিয়ে ভারতের ঢুকে পড়েছিল। দিনভর চেষ্টা করেও মহিষটি ধরতে না পারায় চরম হতাশা ও দুশ্চিন্তায় পড়েন নাজিম উদ্দিন। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর তাৎক্ষণিক সহযোগিতায় মহিষটি ফিরে পেয়েছেন তিনি, যা তার ঈদের আনন্দ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল ঈদের দিন সকালে। নাজিম উদ্দিনের কেনা কোরবানির মহিষটি হঠাৎ ছুটে যায়। সারাদিন ধরে খোঁজাখুঁজি করেও মহিষটির কোনো সন্ধান মেলেনি। একপর্যায়ে জানা যায়, আতঙ্কিত মহিষটি ফেনী নদী সাঁতরে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে।
খবরটি বিজিবির বাগানবাজার বিওপির সদস্যদের কাছে পৌঁছালে তারা দ্রুত বিজিবির রামগড় ব্যাটালিয়নের (৪৩ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আহসান উল ইসলামকে অবহিত করেন। অধিনায়ক তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের ১১৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করে মহিষটি ফেরত আনার উদ্যোগ নেন।
বিএসএফ মহিষটি উদ্ধারে তল্লাশি শুরু করলেও ঘন জঙ্গল ও সন্ধ্যার কারণে গতকাল তা সম্ভব হয়নি। তবে আজ (১১ জুন) সকাল ১১টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা আবারও মহিষটি ধরার চেষ্টা করলে সেটি ফেনী নদী পার হয়ে সীমান্ত পিলার ২২১৩/এমপির কাছ দিয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় বিজিবি সদস্যরা মহিষটিকে আটক করতে সক্ষম হন।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মহিষটি তার মালিক নাজিম উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মহিষ ফেরত পেয়ে আবেগাপ্লুত নাজিম উদ্দিন বলেন, “বিজিবির সহানুভূতিশীলতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা শুধু আমাদের কোরবানির পশুটি ফিরে পাইনি বরং আমাদের ঈদের আনন্দও ফিরে পেয়েছি। এটি শুধু একটি পশু ফেরত আনার ঘটনা নয় বরং এটি বিজিবির পক্ষ থেকে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং সীমান্তবাসীর পাশে থাকার এক অনন্য উদাহরণ।”
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, বিজিবি সবসময়ই মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সীমান্তবর্তী এলাকার প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নে সচেষ্ট থাকে। বিজিবির আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের এই অনন্য দৃষ্টান্ত আবারও তা প্রমাণ করল।
রামগড় ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আহসান উল ইসলাম বলেন, “কোরবানি মুসলমানদের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি যখন এমন একটি দুর্ঘটনায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তখন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর উচিত মানবিকভাবে পাশে দাঁড়ানো। আমরা বিএসএফের সাথে সমন্বয় করে মহিষটি ফেরত আনার উদ্যোগ নিই এবং সেটি সফল হয়েছে।” তিনি আরও নিশ্চিত করেন যে, মহিষটিকে আজ কোরবানি করা হয়েছে।